হাজীগণের সৌদি-আরবে সব রকমের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং এর মান অক্ষুন্ন রাখার জন্য সরকার প্রতি বছর একটি সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। অর্থাৎ এই মূল্যের চাইতে কেউ যদি কম মূল্যে প্যাকেজ বিক্রি করে তাহলে সে হাজীগণকে যথাযথ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে পারবে না বা পারার কথা না।
এ বছর সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্য ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এর কম দামে কেউ প্যাকেজ বিক্রি করলে সেটা অপরাধ বলে গণ্য হবে।
কিন্তু আমাদের দেশের অনেক হাজী সস্তায় হজ্জ করতে চায়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই আকাঙ্খাকে পুঁজি করে সরকার নির্ধারিত প্যাকেজ মূল্যের চেয়ে কম দামে প্যাকেজ বিক্রি করে। আর স্বাভাবিক ভাবেই হাজীগণের সাথে ওয়াদাকৃত অনেক সেবাই তারা ঠিকমত প্রদান করতে পারে না (যেমন : কাছের হোটেলের নাম করে দূরের হোটেলে রাখা, নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা, গাইড প্রদানে অনীহা দেখানো ইত্যাদি)। হাজীগণও এত অসুবিধার মুখোমুখী হওয়ার কারণে ঠিকমত ইবাদাতে মনোযোগ দিতে পারে না। আসলে শরীর-মন শান্তিতে না থাকলে ইবাদাতে মনোযোগ কীভাবে সম্ভব!
সাধারণ মানুষ টেলিভেশনে দেখে এবারও কিছু হজ্জযাত্রী হজ্জে যেতে পারেননি। সৌদি-আরবে গিয়ে অনেকেই এজেন্সি থেকে ভালো সার্ভিস পাননি বলে অভিযোগ করেন। মানুষের মনে এজেন্সি সম্পর্কে খারাপ ধারণা সৃষ্টি হয়।
ভাল-খারাপ সব জায়গাতেই আছে। আমরা বাজারে গেলে ১ কেজি আলু কিনলেও টিপে টিপে দেখি পঁচা নাকি ভালো! এখানে সস্তার সাথে কোন কম্প্রোমাইজ নেই।
অথচ যখন আমাদের ইবাদাতের সময় আসে, বিশেষ করে হজ্জের! তখন আমরা সস্তা খুঁজি! একটু সময় বের করে যে এজেন্সিটার মাধ্যমে আমার এতবড় গুরত্বপূর্ণ ইবাদাত সম্পন্ন হতে যাচ্ছে তাদের সম্পর্কে কোনরূপ খোঁজ নিই না! অথচ খোঁজ নেওয়ার সহজ উপায় আছে।
আমরা যদি বাংলাদেশ হজ্জ বিষয়ক ওয়েবসাইটে যাই (লিংক কমেন্টে) তাহলে প্রথম পাতায় দেখতে পাবো অনেকগুলো শিরোনাম। অভিযোগকৃত এজেন্সিগুলোর একটা মোটামুটি লিস্ট পেয়ে যাবো আমরা। শুধু তাই না, কোন এজেন্সিকে বাতিল ঘোষনা করা হয়েছে, কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে, হাজাীগন ঐসব এজেন্সির বিরুদ্ধে কি অভিযোগ করেছে, এই সবগুলো তথ্য পেয়ে যাবো। আমরা দেখিনা আমার এজেন্সিটা এসব অভিযোগের বাইরে কিনা! এভাবে হজ্জের মত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতের প্রথম থেকেই দায়িত্বে অবহেলা করি! ফলে হজ্জে সার্বিক অভিজ্ঞতা খারাপ হয়। আর এক নাগাড়ে সব এজেন্সিকেই দোষারোপ করি।