shomoy nei

সময় নেই

যুক্তরাজ্যের পটভূমিতে ঘটা একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই গল্প। জনৈক ইয়েমেনী ভদ্রলোক – খুব সম্ভব রেঁস্তোরার ব্যবসায়ী। যখনই তাকে কোন দ্বীনী মজলিসে ডাকা হতো – তিনি বলতেন যে তার ‘সময়’ নেই – বৌ-বাচ্চার জন্য উপার্জন করাও তার জন্য সমধিক জরুরী বলে তিনি মত প্রকাশ করতেন।
বলা আবশ্যক যে, জীবনে তিনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত উপার্জন করেন এবং সেই সুবাদে মৃত্যুর সময় পরিবারের জন্য অনেক সম্পদ রেখে যান। যে মজলিসে তিনি “সময়ের অভাবে” আসতে পারতেন না, সেই মজলিসের দ্বীনী ভাইরাই তার জানাযা ইত্যাদির ব্যবস্থা করেন।
যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী, লাশ সমাহিত করার জন্য, কিছু নিয়ম কানুন ও আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবার অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। সেসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত মরদেহ মর্গে বরফ-বাক্সে সংরক্ষিত থাকে।
ঐ ভদ্রলোকের মরদেহ বরফ-বাক্সে রাখার পরে, ভদ্রলোকের স্ত্রী-পুত্র হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে উক্ত মজলিসের দ্বীনী ভাইদের জিজ্ঞেস করেন যে, ঐ ভদ্রলোকের হাতে অত্যন্ত দামী একটা আংটি ছিল সেটার কি হয়েছে?
দ্বীনী ভাইয়েরা বললেন যে, স্বাভাবিকভাবে তারা আংটিখানা বের করতে পারেন নি বলে, তা রয়ে গেছে ওভাবেই – মৃতদেহকে আর ‘কষ্ট’ দিতে চাননি তারা। মৃত ভদ্রলোকের স্ত্রী-পুত্র অসন্তুষ্ট চিত্তে ছুটলেন ‘মিস্ত্রী’ আনতে – দ্বীনী ভাইদের অনুরোধ অগ্রাহ্য করে।
মজলিসের ভাইরা তাদের অনুরোধ করছিলেন মৃতদেহের আঙ্গুল কেটে আংটি না বের করার জন্য, কারণ আল্লাহর রহমতে তিনি প্রচুর সহায় সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন তাদের জন্য।
কিন্তু তারা তা শুনলেন না – উত্তরাধিকারের দাবীতে ভদ্রলোকের নিস্প্রাণ দেহের আঙ্গুল কেটে সম্পদ আহরণ করলেন ভদ্রলোকের স্ত্রী ও পুত্র। হায়, এদের জন্য উপার্জন করতে গিয়েই তিনি কখনো দ্বীনের দু’টো কথা শোনার ‘সময়’ পাননি!

“হে মুমিনগণ ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান–সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে উদাসীন না করে। আর যারা এরূপ উদাসীন হবে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।” (আল-মুনাফিকূন ৬৩:৯)

লেখক: এনামুল হক, আইসিডিবিড ব্লগ থেকে সংগৃহীত

Share This Article
Tareq Hussain
Tareq Hussain